কানে কিছু ঢুকে গেলে (Foreign Body in the Ear)
কান আমাদের শরীরের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই কান একই সাথে আমাদের শোনা এবং ভারসাম্য উভয় ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এইজন্য কানের ক্ষেত্রে সবসময় সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হয়। কানের যে কোনো সমস্যায় অল্পতেই চিকিৎসা করে ফেলা খুবই ভালো। অন্যথায় সময় যত দীর্ঘ হবে কানের জটিলতা ততবেড়ে যাবে।
প্রায়শ বিশেষ করে শিশুদের কানে বিভিন্ন বস্তু আটকে যেয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন পোকা মাকড় ও কানে ঢুকে আটকে যেতে পারে যেমন- ডাল, বুট, সীম, বিচি, চন্দন গোটা, পেন্সিলের ভাঙ্গা অংশ, রাবার ইত্যাদি। গোসল করার সময়ও কানে পানি ঢুকে আটকে যেতে পারে ফলে হাঁটার সময় মনে হবে কানের ভিতর কেউ ড্রাম বাজাচ্ছে এবং খুবই অস্বস্থিকর শব্দ অনুভূত হবে। যদি এসব ক্ষেত্রে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে কানের জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
লক্ষণঃ
- কানে ব্যাথা হবে।
- কান চুলকাবে।
- অস্বস্থি অনূভব হব।
- যে পাশের কানে সমস্যা ঐ পাশ ফিরে ঘুমাতে খুব কষ্ট হবে।
- শিশু হলে সারাক্ষণ কান্না করতে পারে।
- অনেক ক্ষেত্রে ইনফেকশন হয়ে দুর্গন্ধ যুক্ত পানি বের হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
- সবচেয়ে ভালো হয় নাক কান গলায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক দিয়ে কানের বস্তু বের করা ।
- পোকা মাকড় ঢুকলে তা মারার জন্য কয়েক ফোটা তেল বা স্পিরিট বা মধু কানে দিতে হবে এবং এরপর হার্টম্যান চিমটা বা সিরিঞ্জ দিয়ে তা বের করে আনতে হবে।
- শক্ত বস্তু যেমন রাবার, বিচি ইত্যাদি আটকে গেলে ফরেন বডি হুক দিয়ে তা বের করে আনতে হবে।
- কানে পানি ঢুকে গেলে, যে কানে পানি ঢুকছে ঐ কানে আরেকটু পানি দিয়ে মাথাটা অন্যপাশে কাত করে একটু ঝাকুনি দিলে বের হয়ে আসবে, যদি না আসে তা হলে ভালো মানের কটন বার আস্তে আস্তে কানের ভিতর ঢুকালে তুলায় সে পানি শুষে নিবে। তবে সাবধান কটন বার বেশি নাড়াচড়া করলে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
কানের ব্যপারে সবসময় সেনসেটিভ থাকা উচিৎ। যত্রতত্রভাবে কানের মোম গুলো পরিষ্কার করা উচিৎ নয় যেমন- চাবি, নিজের আঙ্গুল, কলম, পেন্সিল, শলা, ম্যাচের কাঠি ইত্যাদি। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে কটন বার দিয়েও নয়। কারন এই মোম গুলো কানের অনেক উপকার করে থাকে। তারপরেও যদি কানের মোম বা অন্য কোনো সমস্যা অনূভব করেন তাহলে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করুন।