রক্তপাতঃ
রক্ত আমাদের শরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ তরল উপাদান। একজন মানুষের শরীরে ৫-৬ লিটার রক্ত থাকে। এই রক্ত ধমনী এবং শিরার মাধ্যমে চলাচল করে। ধমনীর মাধ্যমে আক্সিজেন যুক্ত রক্ত হার্ট থেকে শরীরের সমস্ত অঙ্গে পৌছে যায় এবং শিরার মাধ্যমে কার্বনডাই অক্সাইড যুক্ত রক্ত হার্টে আসে। যদি কোনো কারনে ধমনী বা শিরা ক্ষতিগ্রস্থ হয় রক্ত বের হয় তাকে আমরা রক্তপাত বলি।
রক্তপাত বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, বিভিন্ন কারনে ও বিভিন্ন সময়ে হতে পারে। কোনো আঘাত পেলে বা ধারালো বস্তু দ্বারা কেটে গেলে সাধারণত শিরা, ধমনী ও কৌশিক জালিকা হতেই রক্তপাত হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্তপাত হলে আমরা সরাসরি দেখতে পারি যাকে এক্সটার্নাল ব্লিডিং বলে (External Bleeding)। কিন্তু শরীরের ভিতরে রক্তপাত হলে বাহির থেকে দেখা যায় না, যাকে ইন্টার্নাল ব্লিডিং বলে(Internal Bleeding)। তবে ফুসফুসে রক্তপাত হলে কাশির সাথে বের হয়ে আসতে পারে। কিডনি বা মুত্রথলিতে বা প্রস্রাবের নালী বা প্রষ্টেট গ্রন্থিতে রক্তপাত হলে প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে আসতে পারে। পাকস্থলি বা অন্ত্রে রক্তপাত হলে বমির সাথে অথবা পায়ু পথে কালো পায়খানা হয়ে বের হয়ে আসতে পারে।
[ বিঃদ্রঃ কিছু ক্ষেত্রে কোনোভাবেই রক্ত বাহিরে আসার উপায় নাই যেমন- পেটে মহাশিরা বা ধমনি ছিঁড়ে গেলে বা কলিজা, প্লিহা ফেটে গেলে। তখন সেক্ষেত্রে লক্ষণ দেখেই বুঝে নিতে হবে]
রক্তপাত এর লক্ষণঃ
- নাড়ীর গতি শুধু বাড়তেই থাকবে
- হাত পা ক্রমান্বয়ে ফ্যাকাশে হয়ে আসা
- অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়া
- হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা
- কানে ভো ভো করা
- লম্বা শ্বাস নেওয়া এবং চোখে আঁধার আঁধার দেখা
- পিপাসা পাওয়া,
- প্রস্রাবের পরিমাণ কমে আসা
রক্তপাত এর প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
- কোনো ক্ষতস্থান থেকে রক্ত পড়তে দেখলে, যে কোনো ভাবে কিছুক্ষণ চেপে ধরলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যাবে।
- যদি তারপরেও রক্ত বন্ধ না হয় তাহলে ক্ষতস্থান জীবানুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করে ঐ জায়গায় একটা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে, অন্য কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে মোটামুটি শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে।
- তবে বাঁধার পূর্বে এন্টিসেপ্টিক দিয়ে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে হবে।
- প্রয়োজনে ড্রেসিং করতে হবে।
- এর পরেও যদি রক্ত বন্ধ না হয় তাহলে ক্ষতস্থান একটু উঁচু করে চেপে ধরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। (তবে মনে রাখতে হবে মাকড়শার জাল, মাটি বা বিভিন্ন অপরিষ্কার জিনিস দিয়ে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করবেন না। এতে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে)
- যদি উপরে বর্ণিত লক্ষণ গুলো দ্বারা বা অন্য কোনোভাবে যদি বুঝতে পারেন শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হচ্ছে, তাহলে দেরি না করে ৯৯৯ এ কল করে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নাহলে রোগীর মৃত্যুর আশংকা বেড়ে যাবে।
[…] […]
[…] ক্রমেই চামড়া সেলাই (Stitching) করে দেবেন না। ড্রেসিং করার নিয়মঃ ক্ষত স্থান জীবানুনাশক দ্বারা […]