শ্বাস বন্ধ হওয়া একটা মারাত্বক সমস্যা। বিভিন্ন কারনে শ্বাস নালী চুপষে গিয়ে যখন ফুসফুসে অক্সিজেনযুক্ত বাতাসের অভাব ঘটে, তখন এমন সমস্যা হয়। ফলে শ্বাস কষ্ট হয় এবং সঠিক চিকিৎসা না পেলে রোগী মারাও যেতে পারে।
তবে সময় মতন প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে হাসপালে পাঠাতে পারলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। এই শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা (Asphyxia) বুঝার উপায় হলো মুখমন্ডল, জিহ্ববার অগ্রভাগ নীল হয়ে যাওয়া, শ্বাস কষ্ট হওয়া ইত্যাদি।
শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার কারণঃ
- পানিতে ডুবলে।
- গলায় ফাস লাগলে।
- অচেতন ব্যক্তির শ্বাসনালীতে খাদ্য আটকালে, জিহ্ববা উল্টে গেলে।
- মুখে রক্তক্ষরণ হয়ে জমাট বাধলে, শ্বাসনালীতে পয়সা, হাড় ইত্যাদি আটকে গেলে।
- বাড়ি/ গাছ পোড়ার ধোঁয়া, এ্যামোনিয়া গাড়ীর কালো ধোঁয়া ইত্যাদি নাকে প্রবেশ করলে।
- মাটির গর্তে বা কুয়ায় আটকে পড়লে।
- বৈদ্যুতিক শক খেলে।
- হৃদরোগে আক্রান্ত হলে (হার্ট এ্যাটাক)।
শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার লক্ষণঃ
- শ্বাসকষ্ট হবে ।
- গলার শিরা ফুলে যাবে।
- ছটফট করবে।
- নাক, মুখ, জিহ্ববা নীল হয়ে যাবে।
- নাড়ীর গতি (পালস) দ্রুত হবে ।
- রোগী অচেতন হয়ে যেতে পারে।
শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
- উপরের কারন গুলোর কোনোটাতে পতিত হলে রোগীকে দ্রুত সেখান থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলা যেমন- পানিতে পড়ে গেলে পানি থেকে তুলে রোগীর মাথা নিচের দিকে দিয়ে শরীর থেকে পানি বের করা, ধোঁয়া যুক্ত স্থান থেকে রোগীকে সরিয়ে আনা, ইলেকট্রিক সুইচ অফ করা ইত্যাদি।
- তারপরেও যদি রোগীর শ্বাস কষ্ট কমে না আসে তাহলে কৃত্রিম শ্বাসের ব্যবস্থা করা।
- কৃত্রিম শ্বাস দেওয়ার পদ্ধতিঃ রোগীকে পিঠের উপর (চিৎ করে) শোয়াতে হবে, ঘাড় বা মাথা টান করে থুতনি তুলে ধরতে হবে। (এরপর ঠোঁটের উপর পাতলা কাপড় বা গজ দেয়া উচিৎ, না দিলেও চলে।)
এরপর নাক চেপে ধরে মুখ দিয়ে জোরে ফু দিতে হবে। রোগীর বুকের প্রসারণ লক্ষ্য করতে হবে, রোগী যাতে শ্বাস ত্যাগ করে। এভাবে বার বার করতে হবে (মিনিটে ১২-১৫ বার) যতক্ষন না রোগী নিজে শ্বাস নেয় বা যান্ত্রিক শ্বাস প্রক্রিয়া (ভেন্টিলেটর) এর সাথে যুক্ত করা যায়।
এদিকে খেয়াল করতে হবে রোগীর হার্ট সচল বা হার্ট বিট শোনা যায় কিনা। যদি শোনা না যায় তা হলে তাৎক্ষনিক কার্ডিয়াক মেসেজ দিয়ে হার্ট সচল করার চেষ্টা করা ।
- সুষ্ঠভাবে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে প্রেরণের জন্য ৯৯৯ কল করা।
এভাবে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে জীবন বাচানো যাবে।