বড় মাথার শিশু

1
1377
বড় মাথার শিশু
বড় মাথার শিশু বা Hydrocephalus


হাইড্রোসেফালাস বা বড় মাথা 
হাইড্রোসেফালাস বা বড় মাথা শিশুদের এমন একটা সমস্যা যেখানে ব্রেইনের মধ্যে পানি জমে থাকে এবং মাথাটা দেখতে বড় মনে হয়।
ব্রেইন ইনজুরির ফলশ্রুতিতে এই সমস্যা হয়ে থাকে ফলে শারীরিক এবং বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত সমস্যা দেখা যায়। এই অবস্থায় চিকিৎসার খুব প্রয়োজন।
হাইড্রোসেফালিস সাধারণত বাচ্চাদের এবং ৬০ বছরের উপরে মানুষদের হয়ে থাকে কিন্তু যুবকদেরও হয়ে থাকে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইউরোলজিকাল ডিসওর্ডার এন্ড স্ট্রোক, এনআইএনডিএস) এর তথ্য মতে প্রত্যেক ১০০০ বাচ্চার মধ্যে ১-২ জন বাচ্চা হাইড্রোসেফালাস নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে থাকে।

বড় মাথার কারণঃ

হাইড্রোসেফালাসের কারন সমূহের মধ্যে CSF অন্যতম যেমন-

  • ব্রেইন অতিরিক্ত CSF উৎপন্ন করলে,
  • CSF এর প্রবাহপথে বাধা থাকলে,
  • রক্ত প্রবাহর মাধ্যমে CSF শোষন করার পরিমাণ কমে গেলে হাইড্রোসেফালাস দেখা যায়।

এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে বাচ্চার জন্মের পূর্বে হাইড্রোসেফালাস হয়ে থাকে । এর কারন সমূহঃ

  • স্পাইনাল কলামের ত্রুটি
  • বংশগত
  • গর্ভাবস্থায় জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হলে যেমন- রুবেলা

এছাড়াও জন্মের পরে, কিছু কারনে হাইড্রোসেফালাস হয়ে থাকে যেমন-

  • কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হলে যেমন- মেনিনজাইটিস
  • রক্তক্ষরণ হলে
  • যদি জন্মের পূর্বে বা জন্মের সময় বা জন্মের পরে ব্রেইন ইনজুরি হলে
  • মাথায় আঘাত পেলে
  • মাথায় টিউমার হলে

 

বড় মাথার লক্ষণঃ
বয়সের একেক অবস্থায় একেক লক্ষণ দেখা যায়। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-

নবজাতক অবস্থায়-

  • মাথার খুলির মাঝে যে নরম জায়গা আছে যাকে আমরা ফন্টানেল বলি সে জায়গা স্ফীত হয়ে যাবে
  • মাথার পরিধি বেড়ে যাবে
  • চোখ সর্বদা নিম্নাভিমুখী থাকবে
  • খিচুনি হতে পারে
  • বমি
  • অতিরিক্ত পরিমান ঘুমানো
  • ক্ষুধা মন্দা
  • মাংস পেশির সক্ষমতা কমে যাবে

শিশু অবস্থায় (সাধারণত ১-২.৫ বছর)

  • স্বল্প স্থায়ী তবে উচ্চমাত্রাই কান্না করে
  • ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন
  • চেহারার গঠনের পরিবর্তন
  • ক্রস চোখ
  • মাথা ব্যথা
  • মাংস পেশি শক্ত হওয়া
  • বাচ্চার বৃদ্ধি মন্থর হবে
  • খেতে কষ্ট হওয়া
  • অতিরিক্ত ঘুম
  • সব কিছুতে বিরক্তভাব
  • সমন্বয় করা হারিয়ে ফেলবে
  • পায়খানা প্রস্রাবের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে
  • ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হবে
  • বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া
  • খিচুনি

প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায়

  • দীর্ঘ মেয়াদি মাথা ব্যাথা হওয়া
  • সমন্বয় হারিয়ে ফেলা
  • হাঁটতে কষ্ট হওয়া
  • পায়খানা প্রস্রাবের নিয়ন্ত্রের সমস্যা হওয়া
  • চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া
  • স্মৃতি শক্তি দূর্বল হওয়া
  • মনোযোগ দিতে কষ্ট হওয়া

ডায়াগনোসিসঃ
চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য লক্ষণ এবং উপসর্গ গুলো খেয়াল করবেন। চিকিৎসক বাচ্চার চোখ দেখবেন যা থাকবে মগ্ন ও কম নাড়াচড়া করবে, ফন্টানেল থাকবে স্ফীত, এবং বাচ্চার বয়সের তুলনায় মাথার পরিধি থাকবে বড়।এছাড়া আরো সঠিক ডায়াগনোসিস করার জন্য চিকিৎসক আল্ট্রাসাউন্ড, MRI, CT Scan দিতে পারেন।

পরামর্শঃ
সর্বপ্রথম একজন শিশু বিশেজ্ঞের পরামর্শ নিবেন।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here