ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস কব্জির একটা কমন সমস্যা। এটি কব্জির ২টা টেন্ডনের(রগের) সাথে যুক্ত। একটি হচ্ছে এ্যাবডাক্টর পলিসিস লংগাস অপরটি হচ্ছে এক্সটেন্সর পলিসিস ব্রেভিস। আর টেন্ডনের কাজ হচ্ছে মাংশপেশিকে হাড়ের সাথে যুক্ত করা। কব্জি দিয়ে বারং বার ভারি কাজ করার কারনে টেন্ডনে প্রদাহ বা টেন্ডনটা মোটা হয়ে যায় ফলে এই সমস্যা হয়ে থাকে। ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস কে স্টেনোসিং টেনোসাইনোভাইটিস ও বলা হয়ে থাকে।
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস রোগ সংক্রান্ত তথ্যঃ
- ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস সাধারণত পুরুষদের থেকে মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে।
- এটি ৩০-৫০ বছরের মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে যারা কব্জি দিয়ে বারং বার কাজ করে থাকে।
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস কারণঃ
- হাতের দীর্ঘ দিনের ব্যবহার
- লেখালেখি এবং গেমিং এর জন্য বৃদ্ধা আঙ্গুলের অতিরিক্ত ব্যবহার।
- গর্ভাবস্থা।
- হাত বা বাহুর বারংবার ভুল ব্যবহার
- এমন সব খেলাধূলা করা যার ফলে হাত এবং কব্জিতে চাপ পড়ে যেমন- গল্ফ, টেনিস।
ইত্যাদি কারনে এই সমস্যা হয়ে থাকে।
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস লক্ষণ ও উপসর্গঃ
- বৃদ্ধা আঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা হবে ফুলে যাবে
- হাত এবং বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে কোনো কিছু চিমটি করে বা শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে কষ্ট হবে।
- কব্জিটাকে যখন সাইড টু সাইড বা ঘুরিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবে তখন ব্যথা অনুভুত হবে।
- বৃদ্ধা আঙ্গুলের নড়াচড়া কমে যাবে
- বৃদ্ধা আঙ্গুলের দূর্বলতা দেখা দিবে
- বৃদ্ধা আঙ্গুল বাঁকাতে কষ্ট হবে
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস ডায়াগনোসিসঃ
চিকিৎসক আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে যে আপনি কখন, কোথায় ও কোন কাজ করতে গিয়ে লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন এবং বর্তমানে কেমনবোধ করছেন।
চিকিৎসক রোগবৃত্তান্ত শোনার সাথে সাথে তিনি আপনার কিছু শারীরিক পরীক্ষা করবেন যেমন-
- কব্জি ও বৃদ্ধা আঙ্গুলের ব্যথার মাত্রা কেমন?
- মুভমেন্ট কেমন আছে?
- শক্তি কেমন আছে?
- কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখতে পারে কেমন?
ইত্যাদি করে রোগ ডায়াগনোসিস করবেন। আরো সঠিক ডায়াগনোসিস করার জন্য চিকিৎসক ফ্রাংকেল স্টেইনটেস্ট এবং হাড়ে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা জানার জন্য এক্সরে দিতে পারেন।
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস এর চিকিৎসাঃ
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিসের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ। তিনি আপনাকে রেস্ট, কিছু ব্যথা নাশক ঔষধ, রিস্ট স্প্লিন্ট, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ সহ বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করে সৃষ্টিকর্তার দয়ায় সুস্থ করার চেষ্টা করবেন। তবে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে অপারেশনেরও প্র্যোজন পড়ে।
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস প্রতিরোধের উপায়ঃ
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।তবে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান আছে যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় যেমন- লিঙ্গ, বয়স, জাতি ইত্যাদি। এছাড়া চিকিৎসকের দেওয়া পরামর্শ মেনে চললে সমস্যা সম্পন্ন প্রতিরোধ করা সম্ভব,যেমন-
- দীর্ঘস্থায়ী হাতের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
- কব্জির অত্যধিক শক্তিশালী ব্যবহার এড়াতে হবে।
- টেক্সটিং এবং গেমিংয়ের জন্য থাম্বগুলির অত্যধিক ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
- হাত এবং কব্জির ভুল ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
- খেলাধূলা করার সময় যথেষ্ট ট্রেইনিং নিতে নিতে হবে যেন কব্জি বা বৃদ্ধা আঙ্গুলে ইনজুরিতে না পড়ে বিশেষ করে গলফ এবং টেনিস খেলার সময়।
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস এর পরামর্শঃ
ডি কিউরভেইন’স টেন্ডিনাইটিস সমস্যায় একজন অর্থোপেডিক্স চিকিৎসকের পাশাপাশি একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। উনাদের আন্ডারে চিকিৎসা নিলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন এমনকি অপারেশনের প্রয়োজন নাও পড়তে পারে।