হাতের কব্জির ব্যথা গুলোর মধ্যে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম (সিটিএস) অন্যতম। এটি হয়ে থাকে যখন হাতের মিডিয়ান নার্ভ (স্নায়ু) কোনো কারনে সর্বক্ষণিক চাপ পেয়ে থাকে। ফলস্বরূপ বৃদ্ধা অঙ্গুল, তর্জনি, মধ্যমা এবং অনামিকার কিছু অংশে অবশ অবশ ভাব, দূর্বলতা কখনো কখনো ফুলে যাওয়া ও তীব্র ব্যথার অনুভব হয়ে থাকে।
কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম কাদের হয়ে থাকেঃ
সাধারণত যারা কব্জি দিয়ে ওজন উত্তলনের কাজ করেন, বারং বার কব্জির মুভমেন্ট করেন যেমন- ড্রাইবিং, টাইপিং ইত্যাদি কাজ করেন তাদের এটি বেশি হয়ে থাকে।
এছাড়াও কিছু রোগ আছে যার কারনে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম (সিটিএস) হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় যেমন-
- কব্জির টেন্ডনের প্রদাহ এবং তার ফোলা হলে
- কব্জি আঘাত প্রাপ্ত হলে (স্ট্রেইন, স্প্রেন, স্থানচ্যুতি, ফ্র্যাকচার)
- হরমোনের পরিবর্তন হলে (যেমন- গর্ভাবস্থা, মেনোপোজ, থাইরয়েড ভারসাম্যহীনতা)
- ডায়াবেটিস হলে
- কিছু ওষুধ ব্যবহারের ফলে (যেমন স্টেরয়েড)
- ডিজেনারেটিভ এবং রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস হলে
কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম রোগ সংক্রান্ত তথ্যঃ
- কার্পালটানেলসিন্ড্রোম (সিটিএস) পুরুষের তুলনায় মহিলাদের হয়ে থাকে। বিশেষ করে বয়স্ক মহিলাদের হয়ে থাকে। মহিলা এবং পুরুষদের সিটিএস হওয়ার অনুপাত ৩:২ (বুক)
- সাধারণত ৩৬-৬০ বছর বয়সের মানুষদের হয়ে থাকে (ফিজিওপিডিয়া-৪)।
Radiopedia CTSAvailable from:https://radiopaedia.org/articles/carpal-tunnel-syndrome-1 (last accessed 23.3.2020) - আমেরিকাতে প্রত্যেক বছর ১০০০ ব্যক্তির মধ্যে ১-৩ জনের কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম হয়ে থাকে।
Hegmann KT, Merryweather A, Thiese MS, Kendall R, Garg A, Kapellusch J, Foster J, Drury D, Wood EM, Melhorn JM. Median Nerve Symptoms, Signs, and Electrodiagnostic Abnormalities Among Working Adults. J Am AcadOrthop Surg. 2018 Aug 15;26(16):576-584. [PubMed]
কিভাবে বোঝবেন আপনার কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম হয়েছে?
কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম এর লক্ষণ ও উপসর্গঃ
- সাধারণত ব্যথা, খোঁচা খোঁচা, জ্বালা পোড়া, অবশ অবশ ভাব কব্জি এবং আঙ্গুলে অনুভব হবে (বিশেষ করে, বৃদ্ধা আঙ্গুল, তর্জনি, মধ্যমা ও অনামিকার কিছু অংশে।
- হাতের মাংশ পেশির দূর্বলতা দেখা দেবে।
- হাতের মাংশ পেশি গুলো শুকিয়ে যাবে ।
- কোনো কিছু শক্ত করে ধরে রাখতে কষ্ট হবে।
- বারং বার কব্জির মুভমেন্ট করলে সমস্যা গুলো প্রকট রূপ ধারণ করে।
- সমস্যা গুলো রাতে বেশি হবে অথবা খুব ভোরে ।
কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম এর ডায়াগনোসিসঃ
চিকিৎসক আপনার রোগ বৃত্তান্ত শুনে আপনার শারীরিক পরীক্ষা করে ডায়াগনোসিস করার চেষ্টা করবে। এছাড়া সঠিক ডায়াগনোসিস করার জন্য চিকিৎসক আপনাকে কিছু টেস্ট দিতে পারেম যেমন,
- নার্ভ কন্ডাকশন ভেলোসিটি (NCV)
- ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাম (Electromyogram)
- MRI
- X-ray ইত্যাদি ।
কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম এর চিকিৎসাঃ
Curpel Tunnel Syndrome (CTS) বা কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম (সিটিএস) এর লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দেরি না করে একজন অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক বা গ্র্যাজুয়েট ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
চিকিৎসক ইঞ্জেকশন, ঔষধ, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, স্প্লিন্ট সহ বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যমে সৃষ্টি কর্তার দয়ায় সুস্থ করার চেষ্টা করবেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম এর পরামর্শঃ
Curpel Tunnel Syndrome (CTS) বা কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম (সিটিএস) সমস্যায় ভয় পাওয়া বাহতাশ হওয়ার কোনো কারন নাই। বিশেষ করে গর্ভবতি মায়েদের এমন সমস্যা হলে, তিনারা বেশি চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। চিন্তিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন। ইনশাআল্লাহ দ্রুত আরোগ্য লাভ করবেন।